Wellcome to National Portal
কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাষ্ট স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩rd ডিসেম্বর ২০২৪

ভিশন মিশন

ভিশন ২০৪১ :

 

উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠন এবং সুস্থ সবল রোগমুক্ত সচেতন কর্মক্ষম জাতি গঠন।

 

কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমান সরকারের একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ এবং এটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের (পিপিপি) এক অনন্য উদাহরণ। গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যেই এটি স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামীণ জনগণ পুষ্টি (পুষ্টি হীনতা ও অতি পুষ্টি)স্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনাচারণ এবং সামাজিক আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগের (এসবিসিসি) মাধ্যমে অন্যান্য প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থামায়েদের জন্য প্রসব পূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা ইত্যাদি সর্ম্পকে আরও সচেতন হতে পারছে। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং যার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ মাকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করে উচ্চতর সেবা কেন্দ্রে রেফার করা হচ্ছে। এগুলো মাতৃমূত্যুশিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনবে। কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে অন্যান্য লক্ষ্যের সাথে সাথে এসডিজি ৩ অর্জনেও (সব বয়সের সবার জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণ) ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করছি এই বিশ্বনন্দিত কার্যক্রমে জাতিসংঘসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সত্যিকারভাবেই একটি স্বাস্থ্যকর জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে।

 

 

কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিসি) চ্যালেঞ্জ ও করণীয় দিকসমূহ :

 

  1. কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) দের চাকুরী কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টে ন্যস্ত না হওয়াতে অনেক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সিএইচসিপি চাকুরী হতে অব্যহতি নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

 

  1. অবকাঠামোগত সমস্যা : যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ১৯৯৮-২০০১ সময়ে নির্মিত হয়েছিল তার অধিকাংশেরই অবকাঠামো নাজুক এবং বেশির ভাগই মেরামত অযোগ্য। সেগুলি পুনঃনির্মাণ আবশ্যক। ২০২২ সাল নাগাদ ২০০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক পুনঃ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। তবে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করতে হবে।

 

  1. ক্রমবর্ধমান চাহিদা : জনগণের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল সেবা আরো সহজলভ্য করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক, যেমন : কমিউনিটি ক্লিনিকসমূহে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস রোগে সেবনযোগ্য ঔষধের সরবরাহ নিশ্চিত করা, স্ক্রিনিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ইত্যাদি।

 

  1. জনসম্পৃক্ততা :  বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি গ্রুপ সকল ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকলেও কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ সকল ক্ষেত্রে সক্রিয় নয়। তাই এ সকল সাপোর্ট গ্রুপকে সক্রিয় করার মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে।

 

  1. মনিটরিং ও সুপারভিশন : মাঠ পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম সরেজমিন সুপারভিশন ও মনিটরিং এ কিছুটা দূর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম সুপারভিশন ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

 

  1. সমন্বয় : জাতীয় পর্যায়ে ও মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের সমন্বয় : যেহেতেু কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী কাজ করে থাকে। কমিউনিটি ক্লিনিক হতে সুষ্ঠু ও মানসম্পন্ন সেবা প্রদানে সিএইচসিপি ও স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারীর সমন্বয় করা খুবই জরুরি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তরের ওপি’র কার্যক্রম কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে বিধায় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্যপরিধি থাকা দরকার।

 

  1. স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্পৃক্ততা : ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনায় কমিউনিটি গ্রুপ ও কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ গঠন এবং পরিচালনায় মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে কারণ তিনি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ তাদের উন্নয়ন বাজেট হতে কমিউনিটি ক্লিনিক মেরামত, পানি, পয়নিষ্কাশন, সংযোগ সড়ক স্থাপন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, আসবাসপত্র সরবরাহ ও বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ। 

 

  1. কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট ও অপারেশনাল প্ল্যান : কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টকে বেগবান করতে সিবিএইচসি অপারেশনাল প্ল্যানের জনবল ট্রাস্টে ন্যস্তকরণের মাধ্যমে ট্রাস্টকে আরো কার্যকর করা। ট্রাস্টে ন্যস্তকৃত জনবলের বেতন ভাতাদি পরিচালন বাজেটের মাধ্যমে প্রদান এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধ সরবরাহ এবং জনবলের প্রশিক্ষণ প্রদান নিশ্চিতকরণ।

 

  1. উন্নয়ন কার্যক্রম : কমিউনিটি ক্লিনিকের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ৫ম সেক্টর প্রোগ্রামে সিবিএইচসি ওপি’র কার্যক্রম চলমান রাখা।

 

  1. এসডিজি সম্পৃক্ততা : অভীষ্ট: ২০৩০ সালের মধ্যে সব বয়সের সকল মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা। কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমে মূল উদ্দেশ্য; লক্ষ্যমাত্রা: স্বাস্থ্য সম্পর্কিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৩টি সূচকের মধ্যে বেশীরভাগই কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত। বিশেষ করে ৩.৮ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিসেবা (Essential Service Package) সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রাটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

 

  1. বয়স্কদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান : বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকে শিশু ও নারীদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বয়স্ক ও অন্যান্য নন কমিউনিকেবল ডিজেজে আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণকরণ।

 

 

 

 

  ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা :

 

  1. রেফারেল ব্যবস্থাঃ ইতিমধ্যে প্রণয়নকৃত রেফারেল কৌশল ব্যবহারের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক হতে রেফারেল ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ (সিসি হতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার থাকা সাপেক্ষে ইউনিয়ন সাব-সেন্টারে)।

 

  1. কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণঃ ৪র্থ সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় অবশিষ্ট কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ ও চালুকরণ এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংলগ্ন এলাকার জনগণের  জন্য ১টি করে সিসি ইউনিট স্থাপন।

 

  1. মনিটরিং ও সুপারভিশনঃ টেকনিক্যাল সুপারভিশনের মাধ্যমে মনিটরিং ও সুপারভিশন ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। টেকনিক্যাল সুপারভিশনের জন্য একটি চেকলিষ্ট প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সকল বিভাগজেলা ও উপজেলা ব্যবস্থাপকদের এই চেকলিষ্ট ব্যবহার বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হয়েছে। এই চেকলিষ্ট ব্যবহার করে সিসি সুপারভিশন এবং এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষনফিডব্যাক ও শেয়ারিং এর মাধ্যমে সিসি হতে প্রদত্ত সেবার গুনগত মান বৃদ্ধি সম্ভব হবে। একই সাথে সাধারণ চেকলিষ্ট যাতে মূলত প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনাগত বিষয় অর্ন্তভুক্তব্যবহার করে সিসি মনিটরিং ও সুপারভিশন চলমান থাকবে।

 

  1. হেলথ আউটকাম পরিমাপঃ পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সিসি সংলগ্ন এলাকার খানাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং এই তথ্য সিসি’তে সেবাদানের তথ্যের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষনের মাধ্যমে সেবা গ্রহণে সমতাপ্রবেশযোগ্যতা ও সেবা কেন্দ্রের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে কিনা তা যাচাই করা হবে। এক্ষেত্রে কোন বাধা থাকলে তা দূরীকরণের পথ বের করা। 

 

  1. ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০ - ২০২৫) সেক্টর ১০ এর স্বাস্থ্য টেবিল- ১০:২ এর লক্ষ্যমাত্রায় উল্লিখিত ১৬টি সূচকের মধ্যে ১১টি সূচক কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

 

  • মাতৃ মৃত্যু হার হ্রাস;
  • শিশু মৃত্যু ও অপুষ্টি হ্রাস;
  • নবজাতকের মৃত্যু হ্রাস;
  • সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও রেফারেল;
  • অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও রেফারেল;
  • পরিবার পরিকল্পনা সেবার আওতা বৃদ্ধি;
  • স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কাউন্সেলিং;
  • কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ইত্যাদি।